হবিগঞ্জ, ২২ এপ্রিল : হবিগঞ্জে বেপরোয়া শিল্পদূষণ অব্যাহত থাকায় এ অঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। হাঁস মোরগ, গবাদি পশু, ফসলের মাঠ, নদী - জলাশয়ের মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী সবই চরম হুমকির মুখে। চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা নদী ও খাল সংলগ্ন জনপদে ভীতির সঞ্চার করেছে। দূষণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ এ অঞ্চলের শিল্পদূষণের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে। অবিলম্বে সরকার এই দূষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি এ অঞ্চলে সামাজিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজ ২২ এপ্রিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার এর একটি প্রতিনিধিদল হবিগঞ্জের শিল্পদূষণ পরিদর্শনকালে বুল্লা বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তারা একথা বলেন।
'ধরা' কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দূষণ কবলিত খড়কির খাল, রাজখাল, শৈলজুড়া খালসহ সুতাং নদীর কাটাখালী, সাধুর বাজার, উচাইল, রাজিউড়া, বুল্লা বাজারসহ নদীর বিভিন্ন অংশ ও বলভদ্র নদী পরিদর্শন করেন।
সুতাং নদীর তীরে বুল্লা বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শরীফ জামিল। ধরা হবিগঞ্জের নির্বাহী সদস্য মো: বাহার মিয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের হবিগঞ্জ শাখার সদস্য সচিব ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বুল্লাবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ বাদশা মিয়া, লাখাই উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মহসিন সাদেক, লাখাই প্রেসক্লাব এর নির্বাহী সদস্য পারভেজ হাসান,
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব শেখ মফিজুর রহমান, লাখাই যুব ফোরাম এর আহবায়ক আকিব শাহরিয়ার, যুগ্ম আহবায়ক আবিদুর রহমান, লাখাই প্রেসক্লাব এর সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল আহমেদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, হবিগঞ্জের শিল্পদূষণ বন্ধ করার দাবিতে এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে শিল্প কারখানা সমূহ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে গড়ে ওঠা সমাজের একটি গোষ্ঠী এই দূষণকে পরোক্ষভাবে জিইয়ে রাখে। কাজেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে যদি শিল্পদূষণ বন্ধ না করা যায় তবে তা ঢাকার চারপাশের নদী দূষণে আক্রান্ত বিপন্ন জনপদের মত একটি দুর্যোগময় এলাকায় হিসেবে পরিণত হবে।
তিনি ধরিত্রী দিবসে এই দূষণের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করার আহবান জানান।
খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, সম্প্রতি এক গবেষণায় সুতাং নদীর পানি ও মাছে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। নদীর পানির ভৌত রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য গুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুতাং নদী ও নদীপাড়ের জনস্বাস্থ্য ও প্রাণবৈচিত্র্য এর জন্য এটি মারাত্মক হুমকির কারণ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan